রাজধানীর মোহাম্মদপুরে অপরাধের স্বর্গরাজ্য গড়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাবেক কাউন্সিলর আসিফ ও রাজিব। তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় কিশোর গ্যাং এবং অবৈধ আখড়াখানা জেনেভা ক্যাম্প দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। যদিও তারা পালিয়ে গেছে, তবে তাদের গড়ে তোলা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো এখনো উসকানি দিয়ে এলাকায় অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করছে।
রবিবার (৯ মার্চ) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-২-এর সিও খালিদুল হক হাওলাদার এসব তথ্য জানান।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার মধ্য দিয়ে পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। এর পর থেকেই রাজধানীর মোহাম্মদপুর অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়। দিন-রাতে সমানভাবে ঘটে ডাকাতি, ছিনতাই এবং খুনের মতো গুরুতর অপরাধ। সেই মোহাম্মদপুর থেকে ৪ ডাকাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
যারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী সেজে দেশের আন্ত জেলা সড়ক-মহাসড়কে ডাকাতি করে, তাদের বিরুদ্ধে র্যাব কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। এ সময় গণমাধ্যমকর্মীরা প্রশ্ন তোলেন, মোহাম্মদপুরে কেন এত অপরাধ ঘটছে, এর পেছনে কি সাবেক সরকারদলীয় নেতারা কলকাঠি নাড়ছেন?
এমন প্রশ্নের জবাবে র্যাব কর্মকর্তা বলেন, "মোহাম্মদপুরের কাউন্সিলর আসিফ ও রাজিব, এদের পৃষ্ঠপোষকতা ও লালন-পালনের কারণে জেনেভা ক্যাম্প একটা মিনি ক্যান্টনমেন্টে পরিণত হয়েছিল। আমরা সেই জেনেভা ক্যাম্পকে গুঁড়িয়ে দিয়েছি। এখন সেখানে কোনো গডফাদার নেই।
আগে জেনেভা ক্যাম্পে সাধারণ মানুষ ঢুকতে সাহস পেত না, কিন্তু আমরা সেই জেনেভা ক্যাম্প এখন উন্মুক্ত করে দিয়েছি। এখন কেউ যেকোনো সময় সেখানে যেতে পারবেন, কোনো অসুবিধা নেই। তবে, বর্তমানে সেখানে মাদকদ্রব্যের উপস্থিতি রয়ে গেছে।
এটা আমাদের পর্যবেক্ষণে রয়েছে এবং আমরা যেকোনো সময়ে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। তিনি বলেন, "মোহাম্মদপুর, আদাবর, বসিলা কেন্দ্রিক যারা রাজনৈতিক পরিচয়ে নেতা ছিলেন, তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় এই কিশোর গ্যাংগুলো আজকে এত বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। কিশোর গ্যাংগুলো তারা লালন-পালন করেছে। তাদের ছত্রচ্ছায়ায় এরা বড় হয়েছে এবং তাদের পরিচয়ে এরা পরিপূর্ণতা লাভ করেছে। এখন, যেহেতু তারা পালিয়ে গেছে, গ্যাংগুলো বেপরোয়াভাবে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করছে।
সাবেক কাউন্সিলররা বা অন্য কেউ কি এদের ইন্ধন দিচ্ছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, "কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা আগে একটা পরিচয়ে বড় হয়েছে, তাই তাদের ইন্ধন অবশ্যই থাকতে পারে। যেহেতু তারা একটি ছত্রচ্ছায়ায় লালন-পালন হয়েছে, সুতরাং সেই প্রভাব তারা কাজে লাগাতে পারে।
0 Comments